ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার আগে

Passenger Voice    |    ১২:৪০ পিএম, ২০২৩-০৮-০৯


ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার আগে

বাজারে সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদা থাকার কারণে এখানে একটি মধ্যস্বত্বভোগী গড়ে উঠেছে। অনেক বিষয় না জানার কারণে বা মধ্যস্বত্বভোগীদের প্ররোচনায় সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ি কিনে হয়রানির শিকার হন অনেকে। দেখে নেওয়া যাক পুরনো গাড়ি ক্রয়ের আগে কী কী বিষয় খেয়াল রাখতে হবে জানালেন বিআরটিএ, উত্তরা, ঢাকা মেট্রো-৩ সার্কেলের উপপরিচালক ইঞ্জিনিয়ারিং কাজী মো. মোরছালীন।

প্রথমে আপনাকে দেখতে হবে গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট ও ট্যাক্সটোকেন হালনাগাদ আছে কি না। যদি আপডেট না থাকে সে ক্ষেত্রে বিআরটিএ পোর্টাল bsp.brta.gov.bd থেকে ‘ফি ক্যালকুলেটর’ অপশন থেকে গাড়ি হালনাগাদ করতে প্রয়োজনীয় ফির পরিমাণ দেখে নিতে পারেন। গাড়ি ক্রয়ের আগে ক্রেতা-বিক্রেতা আলোচনা করে হালনাগাদ করতে ফির বিষয়টি সমন্বয় করে নেওয়া ভালো। গাড়ির স্মার্ট কার্ড না থাকলে শুধু প্রাপ্তিস্বীকার রসিদ (একনলেজমেন্ট সিøপ) দিয়ে গাড়ি ক্রয় ঠিক নয়। গাড়ির স্মার্ট কার্ডের সঙ্গে গাড়ির ইঞ্জিন ও চেসিস নাম্বার মিলিয়ে নিতে হবে। এক অক্ষর/সংখ্যা অমিল হলেও গাড়ি ক্রয় করা যাবে না। গাড়ির ইঞ্জিন, ট্রান্সমিশন সিস্টেম, গাড়ির আগের কোনো এক্সিডেন্ট হিস্ট্রি আছে কি না জেনে নিন। ধারণা না থাকলে কোনো ওয়ার্কশপ টেকনিশিয়ান/মেকানিকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। অনেক ওয়ার্কশপ/সার্ভিস সেন্টার গাড়ি অ্যানালাইসিস করে দেয়।

এ ক্ষেত্রে, বিক্রেতা মালিকানা বদলিসংক্রান্ত বিআরটিএর ফরম ও হলফনামায় স্বাক্ষর করে শোরুমে গাড়ি বিক্রি করে দেন। ফরমে এবং হলফনামায় ক্রেতার কোনো তথ্য থাকে না। পরবর্তীতে শোরুম যার কাছে গাড়ি বিক্রি করে তার তথ্য দিয়ে গাড়িটি মালিকানা বদলির জন্য বিআরটিএ অফিসে আবেদন দাখিল করে। এ ক্ষেত্রে, বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। প্রথমত, দীর্ঘদিন ধরে গাড়িটি অবিক্রীত থাকলে বিক্রেতার TIN-এ গাড়িটি থাকে। ফলে বিক্রেতা নতুন গাড়ি কিনতে গেলে দ্বিতীয় গাড়িতে ১৫০% আয়কর ও পরিবেশ সুরক্ষা সারচার্জ দিতে হয়। অর্থাৎ ১৫০০ সিসি গাড়িতে প্রতি অর্থবছর ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়। দ্বিতীয়ত, ঠিকানা পরিবর্তন বা বিদেশ যাওয়ার কারণে ক্রেতা অনেক সময় বিক্রেতার খোঁজ পান না। বিক্রেতার উপস্থিতি না থাকায় মালিকানা আবেদন নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের স্বার্থে বিআরটিএ অফিসে উপস্থিত হয়ে মালিকানা বদলির প্রাপ্তিস্বীকার রসিদ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। গাড়ির যাবতীয় পাওনা বুঝে পেয়ে ক্রেতার তথ্যসহ হলফনামা ও মালিকানা বদলিসংক্রান্ত কাগজপত্রে বিক্রেতাকে স্বাক্ষর করতে হবে। গাড়িটি কোন ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ থাকলে বিআরটিএ বরাবর ঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত ছাড়পত্র এবং জিরো ব্যালেন্স স্টেটমেন্ট আছে কিনা যাচাই করে নিতে হবে। 

প্রতিষ্ঠানের নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত গাড়ি ক্রয় করার আগে বোর্ড রেজল্যুশনে গাড়ি বিক্রয়ের তথ্য এবং কোম্পানির লেটারহেড প্যাডে ইন্টিমেশন থাকতে হবে। মালিকানা বদলির জন্য আগের মালিকের আবেদন পেন্ডিং থাকা অবস্থায় গাড়ি ক্রয় না করাই শ্রেয়। সম্ভব হলে গাড়ির মূল মালিকের কাছ থেকে গাড়ি ক্রয় করবেন। মালিকানা বদলির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র : হলফনামা : ক্রেতার ৩০০ এবং বিক্রেতার ৩০০ টাকা। হলফনামাগুলো নোটারাইজড করতে হবে। ফি জমার রসিদ, মূল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র, টিন সার্টিফিকেট, পূরণকৃত ফরম এবং পরিদর্শনের জন্য গাড়ি নিয়ে অফিসে হাজির হলে মালিকানা বদলির প্রাপ্তিস্বীকার রসিদ পাবেন। মালিকানা বদলির ফরম বিআরটিএর ওয়েব পোর্টাল brta.gov.bd-এর ‘ফরম’ ম্যানু থেকে পাওয়া যাবে। মালিকানা বদলির আবেদন নিষ্পত্তির পর বায়োমেট্রিকের জন্য ক্রেতার মোবাইলে মেসেজ এলে বায়োমেট্রিক দিতে অফিসে যেতে হবে। পরে গাড়ির স্মার্ট কার্ড সংগ্রহের বিষয়টি ক্রেতাকে মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে জানানো হয়।

সূত্র: দেশ রূপান্তর

 

 

প্যা/ভ/ম